- নিষ্পাপ শৈশবে- যখন উড়ে যাওয়া এরোপ্লেন দেখে পাইলট হতে ইচ্ছে করে। ফেরিওয়ালার ঝুড়িতে রঙবেরঙের পসরা দেখে পথে পথে ঘুরে ফেরি করতে ইচ্ছে করে। দাদার রেডিওর সমস্ত পার্টস খুলে- আর না লাগাতে পেরে স্টোর রুমে লুকিয়ে রেখে ভবিষৎ সায়েন্টিস্ট প্রস্তুতি নিচ্ছে দুনিয়া জয়ের। স্কুল ম্যাগাজিনে নিজের প্রথম প্রকাশিত লেখা ভবিষৎ সাহিত্যিকের ক্ষুদে বুকটা ভরিয়ে তুলছে- সেই সময়ই কিছু শিশুকে মুখোমুখি হতে কুৎসিত কালো থাবার। বিনা অপরাধে রঙিন নিষ্পাপ স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় দুঃস্বপ্নের ভীড়ে। জীবনটা হয়ে ওঠে বিভীষিকা।
ক্লাস ওয়ান পড়ুয়া মেয়েটি টিচারের কাছে পড়তে যেতে চাচ্ছে না। তার অভিযোগ টিচার তাকে ব্যথা দেয়। বাবা-মা ধমক দিয়ে পাঠালেন। তারা বললেন, ‘এসব তোমার ফাঁকি দেওয়ার ছল!’ চোখ মুছে শিশুটি টিচারের কাছে পড়তে বসলো। সে জানে না কেন স্যার তাকে কিছু জায়গায় এভাবে ছোঁয়।
গৃহকর্ত্রীর দূর-সম্পর্কের ভাই এসেছে বাসায়। দুপুরবেলা তারই হেফাযতে দশ বছরের কাজের মেয়েটিকে রেখে গৃহকর্ত্রী গেছেন শপিংয়ে। …… লোকটা মেয়েটিকে হুমকি দিলো কাউকে কিছু বললে মেরে লাশ বানিয়ে ফেলবে।
সাত বছরের ফুটফুটে ছেলেটাও বুঝতে পারলো না চাচ্চু তার সাথে বারবার এমন করছে কেন। চাচ্চু বলেছে এটা একটা সিক্রেট মজার খেলা- কাউকে বলা যাবে না। কিন্তু তার খুব কষ্ট হচ্ছে, ব্যথা লাগছে। আম্মু-আব্বুকে কি তার বলা উচিত? যদি তারা বিশ্বাস না করে? ওকেই পঁচা ভাবে? আচ্ছা, চাচা তো খুব ভালো, তাকে কত কি মজার খেলনা দেয়- কত গল্প করে! বলে দিলে কি চাচা আর কখনো ওকে আদর করবে না? সে কীভাবে বলবে আম্মু-আব্বুকে?
মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে মায়াবতী কন্যাশিশুটি যখন বলে উঠলো গ্রামের বাড়ি বেড়াতে এসে তার সাথে কী নির্মম ঘটনাটা ঘটে গেছে, হতভম্ব মা মেয়ের চোখের জল মুছে বললেন, ‘চুপ করে থাকো, কাউকে বোলো না!’
কাকে আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ বলছি?
চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ (CSA) কে বলা যায়, “the imposition of sexual acts, or acts with sexual overtones, by one or more persons on a child (under 18)”– Save the children, CSA Draft Policy.
• শিশুর গোপন অঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ,
• শিশুকে কারো গোপনাঙ্গ ধরতে বলা,
•penetration of a child’s mouth with a penis,
• শিশুর পর্ন ছবি তোলা,
• শিশুকে পর্নোগ্রাফি দেখানো , শিশুর সামনে নগ্ন হওয়া,
• শিশুদের পতিতাবৃত্তিতে ঢোকানো, বাল্যবিবাহ,
• শিশুর সাথে বয়স অনুপযোগী sexual behavior নিয়ে আলোচনা,
• শিশুকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করা (যা ছেলে বা মেয়ে শিশু যে কারো ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে) ইত্যাদি। সুতরাং, কেবল ধর্ষণ নয়, শিশু-যৌননির্যাতন একটি ব্যাপক পরিসরের শব্দ।
শিশুর উপর প্রভাব- পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারগুলো শারীরিক ও মানসিক এই দু’ভাগে ভাগ করা যায়
মানসিক
বিষণ্নতা, সহিংস আচরণ, আত্মপীড়নমূলক কার্যকলাপ (নিজেকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দেওয়া), আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ও হীনম্মন্যতা, দুঃস্বপ্ন, অসামাজিক আচরণ, সমবয়সীদের সাথে মিশতে না পারা, হঠাৎ হঠাৎ চমকে ওঠা, আত্মহত্যার প্রবণতা (কিশোর বয়েসীদের ক্ষেত্রে), স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে বাধা, শৈশবে যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের যৌবনে সমকামী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শারীরিক
শিশু গুরুতরভাবে আহত হতে পারে, কোন কোন ক্ষেত্রে চিরতরে প্রজনন ক্ষমতা হারাতে পারে, নিউরোল্যজিকাল ড্যামেজ, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, রাতে বিছানা ভেজানো ইত্যাদি।
কিছু তথ্য-উপাত্ত-
১৯০টি দেশের উপাত্ত নিয়ে তৈরি এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের তরফ থেকে বলা হয়েছে বিশ্বে প্রতি দশ জনে একজন মেয়েশিশু ধর্ষিত অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। WHO এর হিসেব মতে প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৪০ মিলিয়ন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।
ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ২০০৭ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতে ৫৩ভাগ শিশু শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।
ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স- নামে একটি বেসরকারি সংস্থার একজন কর্মকতা রোকসানা সুলতানা বলেন, ‘বাংলাদেশের শতকরা নব্বইভাগ শিশু পারিবারিক গন্ডিতেই ধর্ষণ থেকে শুরু করে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক স্পর্শসহ কোন না কোন যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।’ ১৯৯৭ সালে তারা শৈশবে যৌন নির্যাতনের শিকার ৫০ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেন, যার মধ্যে ৪৬ জনই পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, পরিচিত মানুষদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন। অর্থাৎ মাত্র ৪ জন শিশুর নির্যাতনকারী ছিলেন অপরিচিত ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরের কম বয়েসী ২৮৬ জন শিশু সেক্সুয়াল অ্যাবিউজের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৯৯ ভাগ শিশু ধর্ষণের শিকার।
২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যে ৩৯৬ জন শিশু (অনূর্ধ্ব ১৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের কাউনসেলিংয়ের আওতায় আসে তাদের ৮৬ ছেলেশিশু। ছেলেশিশুরাও শংকার বাইরে নয়।
দুঃখজনক যে, বাংলাদেশে এই নিয়ে এখনো সরকারীভাবে পূর্ণাঙ্গ কোনো সমীক্ষা করা হয় নি। সামান্য নথিভূক্ত তথ্য-উপাত্ত যা পাওয়া যায় তা মোটেই প্রকৃত অবস্থাকে প্রতিফলিত করছে না। কারণ, এ ঘটনাগুলোর অধিকাংশই হয় অভিভাবকদের অসচেতনতায় অজানা থেকে যায় অথবা লোকলজ্জার ভয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়।
কীভাবে একজন নির্যাতনকারীকে চিনবেন? কেন কিছু মানুষ- এই ঘৃণ্য আচরণটি করে?
বয়স, চেহারা, লিঙ্গ, পেশা ভেদে একজন শিশু-যৌননির্যাতনকারী যে কেউই হতে পারে। সুতরাং তাকে চেনা তত সহজ নয়। এরা শিশুদের সাথে খুব সহজে মিশে যেতে পারে। সাধারণত গল্প বলে ও উপহার দিয়ে প্রথমে এরা শিশুদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করে নেয়, এরপর নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করে। খুব পরিকল্পিতভাবে এগোয়।
আমরা পেডোফিলিয়ার কথা জানি। এটা একটা সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার। পেডোফিলিয়ার রোগীরা কেবল শিশুদের (যারা এখনো বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছোয় নি) প্রতি আসক্ত থাকে। কেন কিছু মানুষ- এই ঘৃণ্য আচরণটি করে- এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যেসব শিশু শৈশবে দীর্ঘসময় ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলো এদের কেউ কেউ যৌবনে পেডোফাইলে পরিণত হয়।
পেডোফাইলদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেমনঃ এরা প্রধাণত হয় পুরুষ (তবে কদাচিৎ নারীও হতে পারে), সমকামীদের মধ্যেও পেডোফিলিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে এদের তেমন সখ্য থাকে না বরং এদের সখ্য থাকে শিশুদের সাথে, এরা শিশুদের সাথে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ করে।
এখানে, স্মর্তব্য যে, সব পেডোফাইল শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন করে না এবং সব শিশু যৌন নির্যাতনকারীই পেডোফাইল নয়।
নির্যাতনকারী শিশুকে সাধারণত যে কথাগুলো বলে-
- এটা তোমার আমার মাঝে একটা ‘সিক্রেট’, কাউকে বলা যাবে না। (বাচ্চারা এতে মনে করে তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।)
- আসো আমরা বর-বউ খেলি/ বা, ওই মজার খেলাটা খেলি।
- তুমি যদি এটা তোমার মাকে/বাবাকে বলে দাও আমি তোমাকে/ তাদেরকে মেরে ফেলবো।
- তুমি বলে দিলেও তোমার কথা কেউ বিশ্বাস করবে না।
- সবাই তোমাকেই খারাপ ভাববে, সবাই তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে।
- তুমি যদি আমার কথা মতো কাজ না করো আর কোনদিন আমি তোমাকে ভালোবাসবো না।
আপনার শিশুকে রক্ষার্থে আপনার করণীয়-
- [১] কখনো যদি দেখেন/ নিশ্চিতভাবে জানতে পারেন কোন প্রাপ্তবয়স্ক লোক/মহিলা আপনার শিশুকে ‘আমার বউ’/ ‘আমার বর’ বলে সম্বোধন করছে, কঠোরভাবে তাকে নিষেধ করে দেবেন।
[২] শিশুকে কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতি অস্বাভাবিকভাবে আকৃষ্ট দেখলে তার ব্যাপারে সাবধান হোন।
[৩] কখনো শিশুকে কারো বাসায় যেতে/ কারো কোলে বসতে/ কারো পাশে বসতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাধ্য করবেন না। বরং তার কাছ থেকে অনীহার কারণ জেনে নিন আদর করে।
[৪] শপিং মলে দোকানের স্টাফদের বদলে নিজেই শিশুকে পোশাক পরা/ ট্রায়াল দেয়ায় সহায়তা করুন।
[৫] আপনার শিশু যদি মাঠে খেলতে যায়, খেয়াল রাখুন সে কাদের সাথে খেলে। মাঠে বড় ছেলেরাও খেলতে যায়, এদের দ্বারাও নির্যাতিত হতে পারে আপনার শিশু। (আমরা হয়তো কল্পনাও করতে পারবো না- বর্তমানে CSA এর প্রণোদনা যোগানোর জন্য ইন্টারনেটে কত জিনিস ছড়িয়ে আছে। ‘শিশুপর্নোগ্রাফি’ খুব অপ্রচলিত কিছু নয় বাংলাদেশে। সমাজে আরো অনেক ‘টিপু কিবরিয়া’ আছে।)
[৬] যদি দেখেন শিশু তার বয়সের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ sexual behavior জানে, এবং তার বিভিন্ন গোপনাঙ্গকে বিকৃত/অদ্ভুত নামে (কোনো স্ল্যাং) চিহ্নিত করছে, তাহলে তার কাছ থেকে জেনে নিন সে এগুলো কোথা থেকে শিখেছে। রেগে গিয়ে নয়, ধৈর্যের সাথে জানুন। যদি জানার উৎস টিভি/ ইন্টারনেট হয়, দ্রুত ব্যবস্থা নিন। যদি জানার উৎস কোন ব্যক্তি হয়, তার সম্পর্কে সাবধান থাকুন। তার সাথে শিশুকে কখনো মিশতে দেবেন না।
[৭] গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেলে/ কোন আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গেলে রাতে ঘুমানোর সময় শিশুকে আত্মীয়/কাজিন এমনকারো সাথে একা একা ঘুমুতে দেবেন না। নিজের কাছে রাখুন।
[৮] শিশুর স্কুলের শিক্ষকদের সাথে পরিচিত হবেন। কোন শিক্ষক কেমন, কে তাকে আদর করে, তাকে কী কী দেয়, সে স্কুলে কী কী করে- গল্পচ্ছলে শিশুর কাছ থেকে জেনে নিন।
নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিশুকে শেখান-
আপনার শিশুকে/ কিশোর সন্তানকে ধীরে ধীরে তার বয়স উপযোগী sexual education আপনাকেই দিতে হবে, নাহলে কেউ তাকে বিকৃত ধারণা দিয়ে তাকে নির্যাতন করার সুযোগ নিতে পারে। তবে একদিনে সব শেখানোর চেষ্টা করবেন না।
[১] শিশুকে তার প্রত্যেকটি গোপন অঙ্গের নাম জানান। কোন অঙ্গগুলো প্রকাশ করা যাবে কোনগুলো গোপন রাখতে হবে তার পুরোপুরি জ্ঞান তাকে দিতে হবে। আপনার শিশুকে বোঝান- কোনটি ‘ভালো আদর’ কোনটি ‘মন্দ আদর’। কেউ তাকে ‘ভালো আদর’ করলে কোন সমস্যা নেই। ‘মন্দ আদর’ করলেই সাথে সাথে বাবা/ মা/ বাসার বড় কাউকে জানাতে হবে।
[২]তাকে দু’হাত ছড়িয়ে দাঁড়াতে বলুন। সে যাদের পছন্দ করবে না তাদেরকে যেন কখনো এই ত্রিভূজের মধ্যে আসতে না দেয়। (ছবিটি ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স এর ওয়েবসাইট থেকে নেয়া হয়েছে।)
[৩] তাকে আরো বলতে পারেন- তোমার শরীরের তিনটি জায়গা (নিচের ছবিতে চিহ্নিত) আছে, অনেক বড় বিপদ ঘটতে পারে যদি কেউ এগুলো মন্দভাবে ধরে। তাকে এ-ও বুঝিয়ে বলতে পারেন- কখনো কখনো গোসল করিয়ে দেয়ার সময় মা হয়তো ধরতে পারে। অসুখ হলে বাবামায়ের উপস্থিতিতে ডাক্তার ধরতে পারে। ‘ভালো আদর’ করার জন্য কখনো কেউ জড়িয়ে ধরতে পারে। কিন্তু তুমি যখনই বুঝবে কেউ ‘মন্দ আদর’ করবার জন্য ধরেছে তাকে জোরে ‘না’ বলতে হবে। যদি সে না শোনে তাহলে চিৎকার দিতে হবে, সে যে-ই হোক না কেন আর তাকে তুমি যতই ভালোবাসো না কেন। সেই জায়গা থেকে সরে নিরাপদ কোন জায়গায় চলে আসতে হবে। অবশ্যই মা কিংবা বাবা যাকে তুমি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করো তাকে বলে দিতে হবে। (আইডিয়াটি ‘সত্যমেভ জয়তে’র চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ’ নিয়ে করা এপিসোডের ওয়ার্কশপ থেকে নেয়া হয়েছে।)
[৪] শিশুকে শেখান- যে সিক্রেটের সাথে খারাপ কাজ জড়িয়ে থাকে সে ‘সিক্রেট’ বলে দিতে হয় নাহলে বিপদ হয়।
[৫] তাকে বলুন, যারা ‘মন্দ আদর’/ ‘খারাপ আদর’ করবে তারা কখনো ভালো মানুষ নয়, তাদের ভালোবাসা যাবে না।
[৬] অনলাইনে সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ নিয়ে শিশুদের উপযোগী আত্ম্ররক্ষমূলক ওয়ার্কশপের ভিডিও পাবেন, শিশুকে সাথে নিয়ে সেগুলো দেখুন। (নিশ্চিত হয়ে নিন ভিডিওতে কোনো অ্যাডাল্ট কনটেন্ট নেই) আপনার শহরে কোন ওয়ার্কশপ হলে সেগুলোতে শিশুকে নিয়ে যেতে পারেন।
আপনার শিশুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু হন। যেন সে তার সব কথা আপনার সাথে নিঃসঙ্কোচে শেয়ার করতে পারে। তাকে একথা জানান যে, তাকে আপনি ভালোবাসেন ও বিশ্বাস করেন, আপনি সবসময় তাকে সাহায্য করবেন।
ধরুন, আপনার শিশু কারো দ্বারা সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজড হলো, এখন আপনার করণীয় কী?
[১] শিশু যদি কারো নামে আপনার কাছে নালিশ করে, শিশুকে বিশ্বাস করুন। শিশুরা সাধারণত এই ব্যাপারে মিথ্যা বলে না। আপনি অবিশ্বাস করলে ভবিষ্যতে হয়তো আর কখনোই শিশুটি আপনার সাথে শেয়ার করবে না।
[২] শিশুকে এটা বুঝতে দেয়া যাবে না তার সাথে খুব ভয়ংকর কিছু ঘটে গেছে। আপনি আপনার শিশুর সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার করুন, অস্থির হয়ে যাবেন না।
[৩] নিয়মিত একজন ভালো শিশুমনোবিজ্ঞানীকে দিয়ে কাউনসেলিং করান।
[৪] শিশুটি যদি খুব গুরুতর নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন। কখনোই শিশুটিকে বকাবকি করা যাবে না। বরং তাকে আশ্বস্ত করতে হবে যা হয়েছে তা কোনভাবেই তার অপরাধ নয়, অপরাধ ওই ব্যক্তির। ব্যাপারটি যদি আদালত পর্যন্ত যায়, বিশেষ ব্যবস্থায় মনোবিজ্ঞানীর মাধ্যমে শিশুর জবানবন্দী নিতে হবে, কখনোই শিশুকে জনসমক্ষে ‘তার সাথে কী হয়েছে’ এর বর্ণনা দিতে বলা যাবে না। এসব শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
[৫] ভিকটিম শিশুটি যদি খুব অল্প বয়েসী হয়– তাহলে হয়তো সে আপনাকে নির্যাতনকারীর কথা বলতে পারবে না। আপনাকে আগেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে একাকী যার-তার কোলে দেবেন না। নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে সাবধান হোন, প্রয়োজন হলে ডাক্তার দেখান। তবে এগুলো অন্য কারণেও হতে পারে।
• শিশুর গোপনাঙ্গে কোন ক্ষত বা অস্বাভাবিক ফোলা ভাব,
• মুখে ক্ষত,
• পেট খারাপ,
• খাওয়ায় অরুচি,
• বিশেষ কোন ব্যক্তিকে দেখে ভয় পাওয়া,
• হঠাৎ চমকে ওঠা ইত্যাদি।
নির্যাতনকারী কদাচিৎ অচেনা মানুষ হন, অধিকাংশ সময় সে নিকট বা দুরসম্পর্কের আত্মীয়, শিক্ষক, পরিবারের লোক, পারিবারিক বন্ধু, প্রতিবেশী, কাজের লোক ইত্যাদি হন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে- কেবল সন্দেহ করে অহেতুক কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না, এতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। আবার, নিশ্চিত হলে লজ্জায় চুপ করে থাকবেন না, সে আপনার যত ঘনিষ্ট বা সম্মানিত জনই হোক না কেন। পারিবারিকভাবে শালিস করা গেলে ভালো কিংবা আইনি সহায়তা নেবার প্রয়োজন হলে নিন।
আমরা তো এখন আধুনিকতার দোহাই দিয়ে অনেক বিকৃতিকেই স্বাভাবিকভাবে নেয়া শুরু করেছি। ভাবলে ভেতরটা হিম হয়ে আসে- একসময় হয়তো আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ, পেডোফিলিয়া এবং ‘অজাচার’ (ইনসেস্ট) এর মতো জঘন্যতম বিকৃতিগুলোকেও স্বাভাবিক ভাবে নেয়া শুরু করবো।
আপনার আমার নীরবতাই হাজারো শিশুর নির্যাতিত হওয়ার পথ সুগম করে দেবে। আসুন, এদের মুখোশ খুলে দিই সভ্য সমাজে, ধিক্কার দিই, কঠোর আইন প্রণয়ন করি, আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করি। সুস্থ-স্বাভাবিক-নিরাপদ শৈশব- প্রতিটি শিশুর অধিকার! আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠুক নিবিড় পবিত্রতায়-আল্লাহর কাছে এই দোয়া রইলো।
লেখায় ব্যবহৃত তথ্যের রেফারেন্স ও গুরুত্বপূর্ণ আরো কিছু লিঙ্ক:
১)প্রসঙ্গ শিশু যৌন নিপীড়ন (ফারজানা হুসাইন, অক্টোবর ১৩, ২০১৪ বাংলা ট্রিবিউন)
২) Child Sexual Abuse – (Wiki)
৩) ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স বাংলাদেশ
৪) how to identify a pedophile (wiki how)
৫)নিকটজনের কাছেই শিশুরা বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার (মানসুরা হোসাইন, মে ৩১, ২০১৪, প্রথম আলো)
৬) নিজ ঘরেই যৌন নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের যে শিশু মেয়েরা (আহরার হোসেন, ৩১ অগাস্ট ২০১৩ বিবিসি বাংলা)
৭) সত্যমেভ জয়তে’র চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ নিয়ে করা এপিসোডটি (ইউ টিউব লিঙ্ক)
৮ ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ (সংশোধিত)
ফুটনোট[১]
সম্রাট বাবুরের আত্মজীবনী ‘বাবুরনামা’য় বাবুর লিখেছেন, “এ কুৎসিত প্রথা দেশময় এভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো যে প্রত্যেক সমর্থ পুরুষই ছেলে রাখতো। এমন কি এরূপ ছেলে রাখাকে গর্বের কাজ মনে করা হতো এবং না রাখাকে লোকে অপৌরুষের চিহ্ন বলে বিবেচনা করতো।” এমনকি, বাবুর নিজেও স্বীকার করেছেন এক কিশোরের প্রতি তার আসক্তির কথা।
ফুটনোট[২]
হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবিতে আমরা শিশু-পতিতাদের কীভাবে ব্যবহার করা হতো দেখেছি। দেখেছি-ইমতিয়াজ আলীর ‘হাইওয়ে’ চলচ্চিত্রে , যেখানে নায়িকাটির শৈশবে তার ‘আঙ্কেল’ কর্তৃক শারীরিকভাবে বারবার লাঞ্ছিত হওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে, সেই যন্ত্রণা কীভাবে তাকে জীবনভর তাড়িত করেছে তাও দেখানো হয়েছে। ‘মিসটিক রিভার’চলচ্চিত্রটিও দেখে নেয়া যায়! ‘ফরেস্ট গাম্প’ মুভিতেও দেখা যায় শৈশবে মেয়েটি তার পিতার দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন শৈশবে তার চাচা ও মামা কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা। আরো পড়তে পারেন খালিদ হোসাইনির দ্যা কাইট রানার।
ফুটনোট[৩]
আমাদের তথাকথিত আধুনিক পরিবারগুলোতে হরহামেশা রগরগে দৃশ্য সম্বলিত হিন্দি/ ইংরেজি চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও চলছে। শিশুর সামনেই। কেউ কিছু মনে করেন না। তো, যে পরিবার শিশুকে ইমপ্লিসিটলি এই শিক্ষাই দিচ্ছে- ‘এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার’ সে পরিবারের শিশুকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা খুবই সহজ। এমনও হতে পারে, শিশুটি পুরো ব্যাপারটাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নেবে, পরিবারকে জানানোর প্রয়োজনও বোধ করবে না। নৈতিকতার শিক্ষা শিশু পরিবার থেকেই পাবে, না?
****[পড়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রাসঙ্গিক আলোচনা একান্তভাবে কাম্য। নিজে সচেতন হন, অপরকে সচেতন করুন। ]*****
Thought provoking article .Thanks to Rahnuma
LikeLiked by 1 person
I’m honored, Sir! thanks for visiting my blog! 🙂 Pray for us please.
LikeLike
আসসালামু আলাইকুম, রাহনুমা সিদ্দিকা। খুবই পরিপূর্ণ একটা আর্টিকেল। …একটা বিষয় জানতে চাইছিলাম। আপনি বলেছেন, “সমকামীদের মধ্যেও পেডোফিলিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যায়”। এই ব্যাপারে আপনি কোথা থেকে জেনেছেন এবং কী রিসার্চ হয়েছে, যদি আমাকে জানান, তাহলে উপকৃত হব। ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
LikeLike
🙂 ওয়ালাইকুম আসসালাম ফারজানা রিমি। পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ । আপনি নিচের লিঙ্কটি চেক করুন প্লিজ। অথবা গুগলে একটু সার্চ করলে আরো ভালো রিসার্চ পেপার পাবেন। শুভকামনা রইলো।
http://www.rense.com/general24/reportpedophilia.htm
LikeLike
আসসালামু আলাইকুম। ধন্যবাদ, রাহনুমা।
আজকে, আমাদের যে প্রিয় বন্ধুরা, ‘মানবতা’র খাতিরে, সমকামীতাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন, তাঁদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি (ভবিষ্যতে, মানবসভ্যতার আরও অনেক অগ্রগতিকে দেখে যাওয়ার জন্য)। … … (খুব কষ্ট হচ্ছে, সত্যি !!)
LikeLike
খুব তথ্যপূর্ণ লেখা, ধন্যবাদ।
LikeLike
ধন্যবাদ আপনাকেও 🙂
LikeLike
Such a wonderful article Apu. It would be helpful to create public awareness regarding CSA…Thanks for this informative article…
LikeLike
Thank you too for reading and inspiring comment! 🙂
LikeLike
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের সাথে কাজ করছি এক বছরের কিছু বেশি সময়। আমি খুব কম মানুষকে জানি যারা শিশু যৌন নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে ভালভাবে কাজ করেন। এরকম একটি লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
LikeLike
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই। ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর জন্য শুভকামনা থাকলো। আমরা আছি আপনাদের এই মহৎ কাজের সাথে। together we can make a difference insha Allah.
LikeLike
আপা আপনি খুব ভালো একটা লিখা দিয়েছেন। অস্ংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে….
LikeLike
পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ আপা। ভালো থাকবেন।
LikeLike
খুব informative লেখা, পড়ে আবার মন টা তে কষ্টও লাগছে। link গুলো দেয়ার জন্য thanx! এমন এক টি দরকারি field এ কাজ করার জন্য সাধু -বাদ।
LikeLike
আসুন, আমরা সবাই মিলে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতা ও নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবীতে নীরবতা ভেঙে স্বর উঁচু করি।
LikeLike
thanks for presenting such a critical and sensitive issue in such a simple and easy way…..and thanks for highlighting on such a topic about which even discussing is treated as taboo…..save the children….save the childhood….its the time of dreaming of fairy tales…..not the time of becoming scared of nightmares
LikeLike
Thank you brother for your heart-touching comment.
LikeLike
আপনাকে আবার ও ধন্যবাধ জানাচ্ছি শিশুদের যৌন নির্যান্তন সম্পর্কে আমার অনেক কিছুই জানার বাহিরে ছিল। কিন্তু আজ জানতে পারলাম এসব বিষয়। খুব ভালো লিখেছেন যা পরে অনেক কিছুই শিখতে পারলাম। এখন আমার একটি প্রশ্ন আর সেটা হলো আমাদের বাংলাদেশ যে সব মাদ্রাসা / ইস্কুল / কলেজ / ভার্সিটি এসব জায়েগায়ে যদি শিক্ষকদের সহযোগিতায়ে। ছোট বড় সবাই কে সাবধান করে দিলে কি আমাদের সমাজে চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ, নিরাপদ শৈশব, পেডোফিলিয়া, শিশু যৌন নির্যাতন, শিশু লালন পালন কি সহজ হতনা ? এখন যেসব চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ হচ্ছে তারা বড় হয়ে সমগামী হয়েজায়ে অনেক সময় তাই আমি ও চাই এসব সম্পর্কে শিশুদের সাথে খোলা মেলা আলোচনা করা উচিথ
LikeLike
ঠিক খোলামেলা নয়, শিশুদের উপযোগী করে বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করা উচিত। আপনার সাথে একমত ভাই। ইস্কুল/মাদ্রাসাগুলোতে ক্যাম্পেইন করা উচিত। প্রতিটি পাড়ায় সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ করা উচিত।
LikeLike
Baby boy ra kivabe sexual abuse hote pare…. detail e janar kono link thakle janan plz….
R er theke kivabe protirodh gore tola jay tao jante chai.
LikeLike
এই বিষয়ে ডিটেইলড লেখা এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই বোন।
LikeLiked by 1 person
Thanks Rahnuma to present a very very needful topics . Sometimes we forgot all the issues.thanks again for sharing
LikeLike
Thank you for your valuable comment. May Allah bless you.
LikeLike
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার article পরে খুব ভাললাগলো … কঠিন থেকেও কঠিন সাশ্তির ব্যাবস্থা বা আইন চালু করার জন্য অনুরুধ জানাছি ।
LikeLike
সন্তানের চরিত্রগঠন তথা যৌন হয়রানী থেকে রক্ষা করতে নিন্ম বর্নিত বিষয়গুলো ছোট বেলা থেকেই আপনার সন্তানকে শিক্ষা দিনঃ ১. আপনার মেয়ে শিশুকে অন্য কারো কোলে (এমনকি চাচা – চাচতো ভাই) বসা থেকে বিরত রাখুন। তাদের মাঝে লজ্জাবোধ সৃষ্টি করুন। ২. আপনার সন্তানের বয়স দুই বছর পুর্ন হবার পর তাদের সামনে কাপড় পরা/ বদলানো থেকে বিরত থাকুন। এবং ছোট বেলায় যত্র-তত্র উলঙ্গ অবস্থায় যেতে নিষেধ করুন। ৩. কক্ষনো কোন সম- বয়সী কিংবা দাদা- দাদী- নানা-নানী শ্রেনীয় কেউ আপনার সন্তানকে “আমার বউ” / “আমার জামাই” বলার সুযোগ দেবেন না। এমন মশকরা করা থেকে তাদের সাবধান করে দিন। ৪. আপনার সন্তান যখন বন্ধুদের সাথে খেলতে যায় তখন লক্ষ্য রাখুন তারা কি ধরনের খেলা খেলছে? আমাদের দেশে বাচ্চারা “চড়ুই ভাতি” রান্নার সময় স্বামী- স্ত্রী সাজে এবং পরষ্পর বর- কনে সেজে কিংবা পুতুলদের বিয়ে দিয়ে দুষ্টমির ছলে প্রাপ্তবয়স্কদের মত আচরন করে। এসব বিষয় পরবর্তীতে যৌন. হয়রানিতে রুপ নেয়। ৫. কখনো আপনার বাচ্চাকে জোর করে অন্য প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কিংবা মহিলার কাছে পাঠাবেন না – যদি তারা ওই লোকটির সাথে কথা বলতে অথবা মিশতে সাচ্ছ্যন্দবোদ না করে। এমনকি অন্য কোন ব্যাক্তির প্রতি আপনার সন্তান অতি আগ্রহী হলে তার অতি আগ্রহের কারন আবিষ্কার করার চেষ্টা করুন। ৬. যদি আপনার এ্যাকটিভ বাচ্চাটি হঠাৎ করে চুপচাপ হয়ে যায় তাহলে তাকে প্রশ্ন করে তার কারন বের করার চেষ্টা করুন। বুঝতে চেষ্টা হঠাৎ করুন কি কারনে তার মন খারাপ হয়েছে। অনেক সময় তারা যৌন হয়রানীর শিকার হলে লজ্জায় অন্যের কাছে প্রকাশ করেনা- নিজের কাছে হীনমন্যতায় ভোগে। ৭. সাবধানতার সাথে বয়সন্ধীকালে আপনার সন্তানকে সঠিক যৌন শিক্ষা দেবার চেষ্টা করুন। না হয় বন্ধ-বান্ধব/ সমাজ তাকে ভুলভাবে এ বিষয়টি শিক্ষা দিবে। ৮. সন্তান কোন কার্টুন কিংবা ফিল্ম দেখার আগে আপনি সে কার্টুনটি/ ফিল্মটি সম্পর্কে অবগত হয়ে নিন। জেনে নিন তাতে কু- শিক্ষনীয় কিছু আছে কিনা? ৯. আপনার ৩ বছর এর বেশি বয়সী সন্তানকে টয়লেট শেষে নিজে নিজে গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করতে শিখান। তাদেরকে সতর্ক করে দিন তাদের গোপনাঙ্গ অন্য কেউ যেন না ধরে। এমনকি আপনি নিজেওআপনার সন্তানের গোপনাঙ্গ ধরবেন না মনে রাখবেন সু- শিক্ষার শুরু আপনার ঘর থেকেই। ১১. কিছু ব্যাক্তি বা বস্তুকে ব্লাক লিষ্ট করুন – যেটা আপনার সন্তানের মানসিক বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন বাজে লিরিক এর মিউজিক, মুভি – এমনকি ব্যাবহার ভালো নয় এমন আত্মিয় কে আপনার সন্তানের সংষ্পর্শে আসতে বারন করুন। ১২. আপনার সন্তানকে প্রতিকুল পরিবেশে প্রতিবাদ করার জন্য অনুপ্রেরনা দিন। কিভাবে বাজে পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষা করবে তার ধারনা দিন। ১৩. আপনার সন্তান কোন নিদ্ধিষ্ট ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নালিশ করলে তা হেলায় উড়িয়ে দেবেন না। তার কথার সত্যতা যাচাই করুন। তাদেরকে বুঝতে দিন সে একা নয় – তার সহায়তা করার জন্য আপনি আছেন। এটি তার আত্মবিশ্বাস শক্তিশালী করবে। ১৪. নিজের সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই ইসলামী শিক্ষা শিক্ষিত করুন। ১৫. সন্তানকে কখন একা করে রাখবেন না।
LikeLiked by 1 person
চমৎকার কিছু পয়েন্ট! অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য
LikeLike
এমন একটি ( স্পর্ষকাতর বিষয় নিয়ে) আর্টিকেলটি লিখার জন্য প্রথমে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে প্রত্যেকটি ইনফরমেশন; যা আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াননোর জন্য নিঃসন্দেহে সাসাহায্য করবে। তবে ছোট্ট একটু সমালোচনা করছি- উক্ত আর্টিকেলটিতে বাচ্চাদের ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষার আদোলে কোন শিক্ষা দেয়ার কথা বলা হয় নি। ছোট বেলা থেকেই যদি তাকে( শিশুদের) পাপ কিংবা ভালো কাজের একটা সংজ্ঞা শেখানো যায় তবে তা শিশুদের উক্ত সতর্কীকরণ পদক্ষেপের পাশাপাশি বেশ সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি।
ধন্যবাদ। 🙂
LikeLike
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা যারা দেবে (পরিবারের লোক, স্কুলের শিক্ষক, প্রাইভেট টিউটর, আরবী পড়ানোর হুজুর) তারাই যে অ্যাবিউজার!!! 😦 অবশ্যই- শিশুর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে… কিন্তু আমরা যেই বিষয়ে আলোচনা করছি সেখানে শিশুর নৈতিকতা তো কোনো সমস্যা নয়- শিশুটি নির্দোষ।
তবে সম্ভবত আপনি বলতে চেয়েছেন- শিশুর মধ্যে এই বোধটি তৈরি করে দিতে যে- অ্যাবিউজার তার সাথে অনৈতিক আচরণ করছে। একমত তাহলে আপনার সাথে।
LikeLike
অনেকদিন পর এত সুন্দর লেখা পরলাম। সত্য কথা সহজভাবে প্রকাশ করেছেন। এইসব লোকেরাই অনেক মেয়ের বাবা…মেয়ের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন। এরা যুগে যুগে ছিল, থাকবে। সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের।
LikeLike
একদম ঠিক বলেছেন!
LikeLike
আপনার লেখাটি অনেক ভাল লাগলো। আশা করি এটা আমি কাজে লাগেতে পারবো।
LikeLike
শুভকামনা রইলো। আপনাকেও ধন্যবাদ!
LikeLike
I work in child protection. Would be IInterested in being involved in protecting children all over the world particularly Bangladesh as I am Bangladeshi.
I don’t agree with watching videos with children re abuse as it will be further abuse and distress for them. Drawing and other materials can be used to get children to talk about their experience.
LikeLike
It’s really great to hear from an activist in this field. Yes! I do agree with you. But, If you check the link I attached under the write-up, there’s a small workshop for the children shown in the episode. Sometimes this type of videos is very useful to teach the children how they can save themselves. 🙂
Thank you very much for your feedback!
LikeLike
Thanks for talking about CSA. I think we should teach our kids in the school about child sexual abuse and the basic knowledge to protect themselves. I think it should me mandatory in either fifth or sixth grade. Lets write a letter to Education minister.
LikeLike
I do like your suggestion! thank you very much…
LikeLike
অনেক মন খারাপ করে পড়া শেষ করলাম। কষ্টটা ওখানেই যে যাদের জানবার প্রয়োজন তাঁরা হয়তো কখনোই এতো ভালো একটা লেখা পড়েও দেখবেন না। তারপরও আমার বিশ্বাস যে যার অবস্থান থেকে তাঁর সাধ্য মত কাজ করে যাবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার এই তথ্যবহুল লেখাটির জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।
LikeLike
আপনার সুন্দর ও মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ঠিক এটাই দরকার… যে যার অবস্থান থেকে সাধ্যমত কাজ করে যাওয়া..
অশেষ শুভকামনা। ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন।
LikeLike
Well written! Thank you for writing on this topic which needs much attention from all quarters.
LikeLiked by 1 person
Thank you for your comment.
LikeLike
It will really work to raise consciousness among the folk. i think its high time to be concerned with this issue.
LikeLike
Yes!! Let’s work together to raise awareness!
LikeLike
ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি অসাধারন লেখা উপহার দেবার জন্য। আমাদের দেশের সকল মা-বাবাকে যদি লেখাটা পড়ে শোনানো যেত তবে আমাদের আগামী নিরাপদ হত।
আবারো ধন্যবাদ।
LikeLiked by 1 person
অন্তত আশপাশের মানুষগুলোকে সচেতন করি, আসুন… শুভকামনা রইলো।
LikeLike
Such a great work .
LikeLike
🙂
LikeLiked by 1 person
sundor akta lekha. amar mote prottek ma baba abong propto boishko manus ke ai article ta pora uchit. writer k thanks information gulo ato sundor vabe gucia lekhar jonno. tobe kosto aktai lekha sobai porbe na.
LikeLike
আমরা সবাই সবার জায়গা থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাই আসুন।
LikeLike
ei lekhata r jonno dhonnobad apnake….. shisura agamidiner vobissot othocho oder bortoman k amra kotovabe kolusito korci.prithibir sob sishui soishober purno anondo pak ei kamonai kori.
LikeLike
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বোন। একই কামনা আমারও…
LikeLike
Thanks . amar ek bondhu pedofile er moto .or treatment kothay korabo (free/cheapest) ?.ektu janaben pls. Contract no. 01913474024
LikeLike
আপনি নিকটস্থ কোনো মনোচিকিৎসক/ মনোবিজ্ঞানীর সাথে যোগাযোগ করুন।
LikeLike
Very good articles.
LikeLiked by 1 person
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
LikeLike
Anek kichu jante parlam….valo laglo
LikeLike
ধন্যবাদ!
LikeLike
Thank you for such a wonderful article in this sensitive topic. We need to move together and create a combined source of energy to ‘break the silence’ in our ‘close door’ society. I was victim in my childhood and now I am afraid every moment for the safety of my baby daughter. Hope and wish and praying to Allah all the time to give me the strength to keep my daughter safe and all the kids around me too. God bless you.
LikeLike
Thank you sister for your valuable comment. May God accept your effort and bless you and your family with His infinite Rahmat.
LikeLike
this is very very important arical
LikeLike
Thank you
LikeLike
সময় ও যুগ উপযোগী লেখা ।সাহিত্যরস কম কিন্তু বেশ তথ্যবহুল।।
আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা কে চিনি যিনি শৈশবে একাদিকবার এধরনের নিযাতনের শিকার হয়েছিলেন ।তিনি এখন কিছুটা মানসিক বিপদগ্রস্ত।
LikeLike
তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছি।
LikeLike
লেখা গুলো বাস্তবিক,, আসলে এই ব্যপারে আমাদের সামাজিকভাবে সবাই কে সচেতন করা প্রয়োজন,,
কেননা শিশুরা আর উঠতি বয়সের বাচ্চারা এই সব ঝামেলার শিকার হয়,, অস্বীকার করা যাবে না,
:)ধন্যবাদ বাস্তবমুখী পর্যালোচনা করার জন্যে,,,
আর আমি আপনার লেখা গুলো কপি পেস্ট করে আমার ফেসবুক স্টাট্যাসে দিচ্ছি,,
নাম দেব আপনার
LikeLiked by 1 person
আপনাকে ধন্যবাদ!
LikeLike
খুব ভালো লিখেছেন।খুব ভালো লাগলো।আমি জানি, জীবনে একবার হলেও প্রত্যেক মেয়ে এরকম সিচ্যুয়েশন ফেইস করেছে। তাই, সাবধান হতে হবে এখনই। ধন্যবাদ।
LikeLike
ঠিক বলেছেন বোন!
LikeLike
Well written. We need to educate kids of the dangers lurking out there & in home. Thought provoking
LikeLike
thank you
LikeLike
আমি আপনারে চিনিব কবে হায়
চক্ষু মুদিবার পর সত্য বুঝিয়া (!)
কি-বা লাভের মানব চরিত পায়।।……
তথ্যবহুল, সুন্দর, সমাজ-সচেতন লেখার জন্য ধন্যবাদ। যথার্থ কল্যাণ কামনা করছি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে। ভাল থাকুন, লিখতে থাকুন সত্য-সুন্দর-তৌহিদি সমাজ গড়ার স্বপ্নে…>>>
LikeLike
আপনার জন্যও অনুরূপ দোয়া রইলো।
LikeLike
আমার পরিচিত একজন ছোটবেলায় যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়।ঘটনাটি সে কাউকেই বলতে পারে নি।প্রকৃতপক্ষে বলার মত পরিবেশ পায় নি।একমাত্র আমি জানতে পারি।আমিও যেহেতু তখন ছোট ছিলাম আমিও কিছু করার সাহস পাই নি।আমার সেই পরিচিত জন এখনো মাঝেমাঝে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পড়ে।
LikeLike
অ্যাবিউজের ফলে পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারগুলো দীর্ঘসময় ধরে মানুষকে বয়ে বেড়াতে হয়। আপনি তাকে বলুন একজন মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিতে। তার পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি।
LikeLike
খুবই ভাল একটা লেখা………আমি নিজেই ছোট বেলায় এর শিকার হইছি..এবং তারা সবাই ছিল নারী…একজন আমার চাচী,একজন ফুফু আর একজন ফুফাতোবোন……আমাদের সমাজের রুচী বিকৃত লোকগুলো আমাদেরই আপনজন…….তাই সব বাবা মাকে এখনই সতর্ক হতে হবে।
LikeLiked by 1 person
What if the abuser is a kid too? aged 10-14. And the abuse is not exactly sexual harassment but close enough, A 12 year old being abusive to a 4-5 year old. Making them dress improperly? Or, Simply tickling them with the wrong intention? What can be done about that 12 year old?
LikeLike
You had better consult with a psychologist for proper suggestion.
LikeLike
আসুন, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাই। আপনার জীবন সুখী ও সুন্দর হোক। শুভকামনায়… @নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
LikeLike
Thank you so much for informative article like this. I think people can aware from this like me. Arif
LikeLike
thank you too! Let’s work together to raise awareness.
LikeLike
লেখাটি খুবই সুন্দর। আমার যখন সন্তান হবে এসব ব্যাপার মাথায় রাখবো। আর এখন সচেতন আরো বেশি হবো। এমন কিছু ঘটলে সেই লোকটাকে ছাড়বোনা…
আপনার লেখাটি কি কোনভাবেই আপনার নামে আমার এলাকার নিউজ পোর্টালে ছাপার অনুমতি দেওয়া যাবেনা? আমাদের এলাকার পাঠকরা এটা জানলে উপকৃত হতো।
LikeLike
সুন্দর প্রতিজ্ঞা! শুভকামনা রইলো। জ্বি ভাই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আপনি প্রকাশ করতে পারেন। 🙂 🙂
LikeLiked by 1 person
দারুণ। বাংলাদেশের প্রতিটা পরিবারে আপনার লেখার একটা কপি পৌঁছাতে পারলে ভালো হত।
LikeLike
আসুন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাই।
LikeLike
এ-ধরনের বিষয়বস্তুগুলো ইন্টারনেটে দিলে আমাদের দেশের মানুষগুলো খুব উপকৃত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
LikeLiked by 1 person
আসুন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাই।
LikeLike
খুব চমৎকার একটা পোস্ট।
LikeLike
ধন্যবাদ শাহরিন আপু!
LikeLike
অাপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য। অামি চেষ্টা করব এই বিষয়টি অামার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালেয়র শিক্ষক-অভিভাবক কমিটি, উঠান বৈঠকে অবহিত করতে।
LikeLike
চমৎকার উদ্যোগ ভাই। প্রতিটা স্কুলে যদি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ক্যাম্পেইন করা যেত কতই না ভালো হত! অনেক ধন্যবাদ। আপনার সাফল্য কামনা করি।
LikeLiked by 1 person
may peace be on you (Rahnuma). The writing was best I ever read, especially first line was just splendid “Chup Kore Thako, Kawke Bolona”.
Thank you very much for such writing……….
Simply, the activist are not human being, not even wild being, they are just (beep, beep)…………..
LikeLike
May peace be upon you too. Let’s work together to raise awareness.
LikeLike
Thanks a lot. I am going to print this and distribute among some people to make them read as many still don’t have the internet access if you agree. Of course I’ll use your name and the link also. Think your answer will be affirmative.
LikeLike
CERTAINLY! you can print and distribute it to raise awareness. 🙂 Thank you and best wishes for your effort…
LikeLike
ভালো লাগলো……!
LikeLike
ধন্যবাদ। 🙂
LikeLike
ভাল একটি প্রতিবেদন।খুব ভাল লাগলো।
LikeLike
আশা করি, আপনার পরিবার ও পরিচিতজনদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবেন। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
LikeLike
Thanks for such an important article . I shall share this with my friends. want to start awareness among my friends and family. things must be changed. we can’t let this heinous crime be happen all the time. again thank you.
LikeLike
I appreciate your spirit! Let’s work together to raise awareness. Good wishes… & Thank you too.
LikeLike
It is the most important article for our society,so should read every person.
LikeLike
thank you for reading! Let’s work together for raising awareness.
LikeLike